রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা,বারহাট্টা প্রতিনিধি।
“ঈদ মানে আনন্দ,ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি”। তেমনি ঈদের ছুটি কাটাতে অনেকেই বাড়ী চলে গেছেন। কিন্তু এমন কিছু পেশাজীবী মানুষ রয়েছেন যারা ঈদেও পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সময় দিতে পারে না। এর মধ্যে অন্যতম হলেন পুলিশ।
এমনই এক পুলিশ সদস্য লাভলি আক্তার (কনস্টেবল), তিনি ঈদের খুশিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে পেশার খাতিরে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন নেত্রকোনায় আধুনিক সদর হাসপাতালে।
গত ২৮ এপ্রিল রাত থেকে গত ৬ দিন ধরে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা রোস্টার ডিউটি করছেন লাভলী আক্তারসহ আরও ৩জন পুলিশ কনস্টেবল। মানসিক ভারসাম্যহীন উদ্ধারকৃত এক কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে তারা সেখানে কর্মরত রয়েছেন। হাসপাতালে নার্স সংকট থাকায় ভারসাম্যহীন কিশোরী জন্য বাড়িয়ে দিয়েছেন সেবার হাতও।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল লাভলী আক্তারের স্বামীও পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। তবে স্বামী ঈদের ছুটি পেলেও লাভলী আক্তার ছুটি পাননি।
স্ত্রী ছুটি না পাওয়ায় স্বামী রঞ্জু মিয়া নিজেও ছুটি না নিয়ে জনসেবায় নিয়জিত রয়েছেন। নিজে ছুটি না নিয়ে অন্যদের সুযোগ করে দিয়েছেন ঈদের ছুটি নেওয়ার।
নেত্রকোনায় আধুনিক সদর হাসপাতালে মানসিক ভারসাম্যহীন উদ্ধারকৃত ওই কিশোরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে শিশু কল্যাণ বোর্ড মোট চারজন পুলিশ কনস্টেবলকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ওই কিশোরীর দেখাশোনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতেই দায়িত্বরত চারজন কনস্টেবলের কেউই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কনস্টেবল শিপ্রা জানান,কিশোরীটির দূরের বা কাছের কোনো স্বজনই নেই তার পাশে। তাই আমরাই এখন ওর স্বজন।
তিনি আরও বলেন,সরকারি ছুটি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের এমন দায়িত্বকে তারা বরণ করে নিয়েছে ভালোবেসে। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজেদের আনন্দ ত্যাগ করতে পারায় এই পেশা নিয়ে তারা গর্বিত।
শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন,পুলিশ তদন্তে মেয়েটির বাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে,মেয়েটির বাড়ি পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগরের বলরামপুর গ্রামের। পুলিশ পাঠিয়ে কিশোরীর মায়ের খোঁজ করা হয়েছে।
সচেতন নাগরিক ও নারী নেত্রীসহ শিশু কর্মীরা বলছেন, এই কিশোরী মানসিক ভারসাম্যহীন এবং পাশাপাশি নেশাগ্রস্ত। কীভাবে নেশা জাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হলো তার কারণ এখনো জানা যায়নি।
আর্থিক কষ্টে জীবনযাপন করা মায়ের কাছেও কিশোরীটি নিরাপদ নয় বলে মনে করেন তারা। তাই সরকারি শোধনাগার বা মানসিক চিকিৎসালয়ে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার মাধ্যমে কিশোরীটিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
Leave a Reply