ডেক্স রিপোর্ট ঃ-
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মিয়া পরিবারের সন্তান গাউছুল আলম সিদ্দিক বাংলা শিক্ষক নামে খ্যাত (৭৮) পিতা: মৃত: আব্দুস সামাদ তালুকদার, লেখাপড়া ৬০ এর দশকে বিএ,বিএড শিক্ষকতা ৭০ দশক থেকে শুরু প্রধান শিক্ষক পাথরঘাটা হাতেম আলী হাইস্কুল, সহকারী শিক্ষক রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সহকারী শিক্ষক গুলিশাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সহকারী শিক্ষক মিরুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তিনি তার প্রথম জীবনে স্যানেটারী ইন্সপেক্টর পদে চাকুরীতে যোগদানের সুযোগ পেলেও সে পদে যোগদান করেননি। তিনি তার কর্মজীবনে বেছে নিয়েছেন মানবতার মাঝে আলোর দিশা দেয়ার একমাত্র প্রদীপ শিখা শিক্ষকতা। আমি আমার বৈবাহিক জীবনে ২৩ বছরের দেখা তিনি ছিলেন আদর্শবান মানবতার প্রতিচ্ছবি। হাস্বোজ্জল বদন ও খোলা মনে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে ছিল তার দুনিয়াবী ঝামেলা মুক্ত অমর বন্ধন। ছেলে মেয়েদের পাঠদান দিতেন একান্ত নিজের সন্তানের মত করে। এ বিষয় অর্থকে কোনদিনই গুরুত্ব দেননি। নিম্ম বিত্ত অসহায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের ফ্রি সার্ভিস দিয়েছেন। যার কেউ কেউ আজ দেশের উচ্চাসীনে কর্মরত রয়েছেন। যা উপলব্ধি করেছি তার এ শোকাবহ প্রস্থানে ও বৈরি আবহাওয়ায় প্রিয়জনদের জানাযায় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে। শিক্ষকতা থেকে অবসর নেয়ার পর হজ্ব পালন করে ধর্ম কর্মের প্রতি অনেকটা আগ্রহ বেড়ে যায়। যে কারণে একজন জেনারেল শিক্ষিত লোক হয়ে জীবন সায়াহ্নে এসেও লজ্জা শরমকে উপেক্ষা করে কোরআন শিক্ষায় নিজেকে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেন। প্রত্যহ অনুশীলনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ও হাদিসে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেন যে ব্যাক্তি তার জীবনে ৭০ খতম কোরআন তিলয়াত করবে পরকাল দিবসে কোরআন তাকে সুপারিশ করে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবে। সে ৭০ খতমের টার্গেট করে ৪৭ খতম দেয়ার পর তার জীবনের অবসান ঘটে। সম্পর্কে আমি তার ছোট মেয়ে জামাতা। আমাকে তিনি অনেক স্নেহ করতেন। যতটুকু সময় কথা হত কোরআন হাদিসের বিভিন্ন বিষয় আমার থেকে জানার জন্য শুধু উদগ্রীব থাকতেন। তার কর্ম পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ প্রতিয়মান হয়েছিল কোরআন হাসিদের বাতলানো পথ ছাড়া পরকালে মুক্তির কোন বিকল্প নেই। সে বিবেচনায় হয়তো সৃষ্টকর্তা তাকে তার নেকবান্দাদের তালিকায় কবুল করে নিয়েছেন। ১৭ আগষ্ট ২০২১ইং মঙ্গলবার সকাল ৮ ঘটিকায় আকস্মিক বুকে ব্যাথা অনুভবের মাধ্যমে অসুস্থ হয়ে ৯টার দিকে না ফেরার জগতে পাড়ি জমান। যে অনাকাঙ্খিত খবরটি আমার সকল চেতনাকে পাষানের ন্যায় নিথর করে দেয়। আশাহত হয়ে সাথে বহন করা ডাক্তরকে নামিয়ে দেই পুনঃরায় তার গন্তাব্যে। আমার অর্বাচীন শিশু কণ্যা হুমায়রার সীমাহীন নানু ভক্ত অঝোর ধারার কান্না আমি আর আমাকে সামলাতে পারিনি। শৈশবে তার কাছে থাকা দুই নাতি শিহাব ও ইমনের শক্ত মায়ার বাঁধনে ভাল বাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে যেন ক্লেদাক্ত কবর জড়িয়ে কান্নায় বুক ভাসিয়ে। ওদের মত আমিতো আর কাঁদতে পারিনা। যে কারণে সকলের অগোচরে নিভৃতে চোখের জলে একাকী বার বার অশ্রু শিক্ত হই। এক সময় তার কাছে থাকা আদরের বড় মেয়ে আছমা আক্তার বিজলী আমেরিকায় বসে ইমুতে বাবার নিস্তব্ধ নিথর দেহ দেখে কান্নার সাগরে বাবাকে একটি বারের মত না ছুঁইয়ে দেখার বেদনার অশ্রু সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। আল্লাহ বড় আপাকে সহ আমার শ্বাশুরী মা ও তিন মেয়ে সহ অসংখ্য গুনাগ্রহীদের ধৈর্য্যধারণ করার তৌফিক দান করুন ও পরকাল দিবসে আমার শ্বশুর বাবাকে জান্নাতের উচ্চাসীনে উধিষ্ঠিতদের দল ভুক্ত করুন আমিন।
Leave a Reply