রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা,বারহাট্টা প্রতিনিধি।
নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধটি ঝুঁকির মুখে থাকার কারনে হাওরাঞ্চলের কৃষকরা প্রতিদিন বাঁধ মেরামত করছেন, অন্যদিকে কাটছেন কাঁচাপাকা ধান। সবসময় বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা।
পুরা বছরের একমাত্র ফসল হওয়ায় হাওরে ঢলের পানি ঢুকার পর থেকে গত সাতদিন ধরে টানা বাঁধ রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ওই অঞ্চলের কৃষকেরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রমজানের শুরু থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে ধনু নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী ফসল ডুবে গেছে। সেই সাথে হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কীর্তনখোলা ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ ফাটলের কারণে শঙ্কায় দিনরাত বাঁধের ওপরেই থাকছেন তারা।
কৃষকদের পরিশ্রমের ফসল বাঁচাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় প্রশাসন বাঁশ চাটি দিয়ে বাঁধ মেরামতে সহযোগিতা করলেও শঙ্কা কাটছে না কৃষকের। প্রতিদিন স্বেচ্ছাশ্রমে নিজ উদ্যোগে বাঁধ মেরামত করছে শত শত কৃষক। রাতে বাঁধ মেরামত করে পরদিন সকালেই বাঁধে দেখা যায় ফাটল। বাঁধের এক এক দিন এক এক জায়গায় এমন চিত্র দেখে হতভম্ব কৃষকরা।
তবে বিগত দিনগুলোর চেয়ে আজ (৯ এপ্রিল)শনিবার পানির চাপ কম থাকায় কাঁচা ধান কাটা কিছুটা কমিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে কৃষকদের কথা ভেবে দূর দূরান্ত থেকে শ্রমিকরাও এসে কাঁচাপাকা ধানই তারা কেটে দিচ্ছেন।
সূত্রে জানা গেছে, খালিয়াজুরী সদর ও চাকুয়া ইউনিয়ন বেষ্টিত সবচেয়ে বড় ৫৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে কীর্তনখোলা ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটি প্রতিবছরই ভাঙে আর কম বেশি ফসলের ক্ষতি হয়। এবারো পাহাড়ি ঢলে নদ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙনের কবলে পড়েছে ওই একই জায়গার বাঁধ। বাঁধের বিভিন্ন স্থানে প্রশস্তের পরিমাণও ভিন্ন। তারমধ্যে প্রায় ১২ ফুট প্রশস্তের মধ্যে সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কিছু কিছু জায়গায় ৮ থেকে ৯ ফুট ধসে গেছে। বাকি ২ থেকে ৩ ফুট প্রশস্ত আটকে রেখেছে পানি। যে কারণে প্রতিদিন বিভিন্ন পয়েন্টে ফাটল অব্যাহত থাকায় বাঁধ মেরামত কাজ করতেই হচ্ছে তাদের। এদিকে এ বছর বাঁধে কৃষকদের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও প্রায়দিন করছেন রাত্রি যাপন।
বাঁধ এলাকায় থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. মিজানুর রহমান জানান, তারা স্থানীয় প্রশাসনসহ কৃষকদের সহযোগিতায় এখনও বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে পারছেন না। যে কারণে ফসল হানি থেকে বেঁচে গেছেন। তিনি আরও জানান, পানির চাপ কমতে থাকলে বাঁধটি টিকে থাকবে।
Leave a Reply