মল্লিক মোঃ জামাল ঃ-
ইছাহাক আলী শরিফ (৯২) খুব সাধারণ একজন মানুষ। জীপন যাপনও তার অত্যন্ত সাদামাটা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ব পরিবারে কিছু বিপদ’গামি সেনা সদস্যর হাতে নিহত হওয়ার পর থেকেই তিনি বাক রুদ্ধ হয়ে পরেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু মানতে পারেনি,
দিন মজুর ইছাহাক আলী। শেখ মুজিবকে হারানো শোক বুকে ধারণ করে, দীর্ঘ ৪৬ বছর তিনি খালি পায়ে কালো পোশাকে চলাচল করেন। স্থানীয়রা তাকে মুজিব ‘পাগল’ বলে। বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট বগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে একটি জীর্ণ ঘরে বাস এই মুজিব ভক্ত ইছাহাক আলী।
স্থানীয়রা বলেন যখন থেকে ইছাহাক আলী শরিফকে দেখছি, তখন থেকেই দেখতাম কালো লুঙ্গি ও জামা গায়ে খালি পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন এ পাড়া থেকে ওপাড়া! আর কখনো শেখ সাহেব কে নিয়ে কেউ উল্টো কথা বললে প্রতিবাদ করেছেন। এজন্য তিনি একবার হামলার শিকার ও হয়েছিলেন। পুরো জীবন শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ বলে কাটিয়ে দেওয়া পাগল এই ইছাহাক আলী। ২০০১ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় তখন এই বঙ্গবন্ধু অন্তপ্রাণ ‘পাগল’ মানুষটি পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিতো। কতো লোকের কাছে যে তাকে মার খেতে দেখেছি, শুধু ‘জয়বাংলা’ বলার জন্য। নানা রকম অত্যাচার, নিপীড়ণ তাকে জয়বাংলা থেকে সরাতে পারেনি।
সারাজীবন , মুজিব, হাসিনা, নৌকা করে যাওয়া লোকটা কারো কাছে কিছু চাননা। তার চাওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটু দোয়া,তিনি বলেন, এখন সবাই আওয়ামী লীগ করে
আওয়ামী লীগ কে ভালোবাসে আর আমি মুজিবকে ভালো বাসি। একজন মুজিব ছিল বলেই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাস্ট্র । ৭৫ সালে শেখ সাহেবের পরিবারের অনেক লোক শাহাদাত বরন করেন। আজ তারা সকলেই এই বাংলার মাটিতে চির নিদ্রায় ঘুমে আছে। যে মাটিতে নেতা শেখ সাহেব ঘুমিয়ে আছে, সেই মাটিতে আমি জুতো পায়ে কখনো হাঁটতে পারবোনা। তাই শেখ সাহেবর মৃত্যুর পর আর জুতো পায় দেইনা। শরীরে থাকে কালো পোশাক।
শেখ সাহেব কে আমরা রাজনৈতিক দলদিয়ে ভাগকরি। শেখ সাহেব কোন দলের জন্য এ দেশকে মুক্ত করেনি। তিনি বাংলার জনগনের জন্য মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন । তাই শেখ সাহেবকে রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে রাখা উচিত রাখা উচিত।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার ইচ্ছে আছে কিনা জানতে চাইলে
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ব্যাস্ত মানুষ, যদি কখনো তিনি সময় দেন তাহলে মৃত্যুর আগে একবার হলেও দেখা করব। কিন্তু তার কাছে মোর চাওয়ার কিছু নাই। তার বাবা দেশের জন্য অনেক কিছু করছে। আর শেখ হাসিনাও তার বাবার মত মানুষের জন্য কাজ করছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোটবগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মু. তৌফিকউজ্জামান তনু বলেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর থেকে খালি পায়ে হাঁটা ও কালো পোশাক পরিধান করা ইছাহাক আলী শরিফ এলাকায় মুজিব পাগল নামে পরিচিত। তিনি কোনো কিছু দাবি না করলেও চেয়ারম্যান হিসেবে তার পরিবারের দিকে আমি বিশেষ খেয়াল রাখি।
Leave a Reply