রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা,বারহাট্টা প্রতিনিধি।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে রিফাত আহমেদ রাসেল নামে এক সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও প্রতীকী সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
এঘটনার প্রতিবাদে (১২ মার্চ) শনিবার দুপুরে পৌর শহরের মোক্তারপাড়া জেলা প্রেসক্লাব মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা।
নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সাংবাদিক আলপনা বেগমের সঞ্চালনায় এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে অভিযুক্ত মেয়র আলাউদ্দিন আলালের অপসারণ দাবি জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামলেন্দু পাল, আমাদের নেত্রকোনার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, শেখ খলিলুর রহমান ইকবাল, সঞ্জয় সরকার, কামাল হোসাইন, পল্লব চক্রবর্তী, আনিসুর রহমান, ভজন দাস, সোহান আহমেদ, আমিনুল ইসলাম মনি ও মহসিন মিয়া প্রমুখ। এসময় বক্তারা সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের তরুণ সাহসী সাংবাদিক রিফাত আহমেদ রাসেল ও তার পরিবারের নিরাপত্তায় প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ দাবী জানান।
স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর জেলা প্রশাসন থেকে সোমেশ্বরী নদীর পাঁচটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি চক্রের সদস্যরাই এ ইজারা পেয়ে আসছেন। অভিযোগ আছে, ওই চক্রের প্রধান পৌর মেয়র আলাউদ্দিন। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ইজারাদারেরা বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করেন। সহস্রাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হয়। হাজার হাজার ট্রাক ও লরি দিয়ে বালু পরিবহন করার ফলে পৌর শহরের প্রধান সড়কসহ সব রাস্তা ভেঙে গেছে। ভেজা বালুর ফলে সারা বছর রাস্তায় কাদা থাকে।
ঘটনার বিবৃতিতে জানা যায়, একাত্তর টিভি ও দৈনিক নয়া শতাব্দীর দুর্গাপুর প্রতিনিধি রিফাত আহমেদ বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন করেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রিফাতকে বাসায় ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন মেয়র আলাউদ্দিন। এ সময় তাঁকে বালুর নিচে পুঁতে মেরে ফেলার হুমকি দেন মেয়র। ওই ঘটনার ধারণ করা ৯ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের একটি অডিওতে শোনা যায়, একজনকে লাঠি আনার নির্দেশ দিচ্ছেন মেয়র। রিফাতকে এলাকাছাড়া করারও হুমকি দেন তিনি।
এরপর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র ও তাঁর লোকজন রিফাতের বাবা রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন। ওই দিন গভীর রাতে রিফাতের বাসার গেট ও সামনের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সাংবাদিক রিফাত।
দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিন আলাল বলেন, রিফাতের ও আমার বাসা খুব কাছাকাছি। তার বাবার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তার বাবার উপস্থিতিতেই তাকে ডেকে এনে কিছুটা শাসন করেছি। তাকে শাসন করার সামাজিক অধিকার আমার আছে। তাছাড়া তার বাবার সামনেই রিফাত ভুল স্বীকার করে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরাও বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন।
Leave a Reply